নাসির উদ্দিনের সাথে খালেদ মুহিউদ্দীনের বাকবিতণ্ডা, মিশ্র প্রতিক্রিয়া ফেসবুকে

 নাসির উদ্দিনের সাথে খালেদ মুহিউদ্দীনের বাকবিতণ্ডা, মিশ্র প্রতিক্রিয়া ফেসবুকে

অনুষ্ঠান সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন জানান, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের নেতাদের নেতৃত্বে কোনো কিংস পার্টি হচ্ছে না—সমন্বয়কদের এই দাবি সমর্থন করেন কিনা? এ নিয়ে আমরা একটা জরিপ করেছি সেখানে শতকরা ৬২ ভাগ লোক বলেছেন যে, তারা এটি সমর্থন করেন না। না বলেছেন ৩৮ শতাংশ ভোটার। এরপর খালেদ মুহিউদ্দীন নাসিরের কাছে জানতে চান, নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে আপনারা বলছেন যে, নির্বাচন বড় বিষয় না। তবে নির্বাচনের চেয়ে বড় বিষয় কী? আমি তো মনে করি নির্বাচনের চেয়ে বড় বিষয় আর কী হতে পারে। কারণ এই সরকার অনির্বাচিত, এই সরকার জনভোটে হয়নি। আপনারা কেন অনির্বাচিত থেকেই এতোগুলো সংস্কারের কথা বলছেন? পাশাপাশি আপনি যে দল করেন সেই দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেছেন যে, তিনি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস মানেন না। আবার বিজয়ের মাসে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা দিয়ে ঘুরানো হয়েছে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে—আপনারাও আওয়ামী লীগের মতো ন্যারেটিভ বা বয়ান তৈরি করতে চাচ্ছেন। কী বলবেন?

Ads

জবাবে নাসির পাটওয়ারী বলেন, জুলাই আগস্টের গণঅভ্যত্থানে এতোগুলো মানুষের প্রাণ গেল, এতোগুলো মানুষের অঙ্গহানি হলো। এর বিচার কে করবে? জবাবে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, আপনারা কেন মনে করেন যে, বিএনপি এলে এর বিচার হবে না। আপনারা সরকারে থেকেই এর বিচার করতে হবে। জবাবে নাসির বলেন, দেখুন এই সরকারটা শুধু আমাদের নয়; এটি সবার সরকার, গণমানুষের সরকার। এ পর্যায়ে খালেদ বলেন, আমি মনে করি না যে, এটি আমার সরকার। কারণ ও আমার ম্যান্ডেট নেয় নাই। নাসির বলেন, আপনি মনে করতে পারেন। আপনি জুলাই-আগস্টের চেতনাকে ধারণ নাও করতে পারেন। খালেদ কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে নাসিরকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট ধারণ করি। নাসির আপনারা এ রকম ট্যাগিং করিয়েন না। আমরা গণআন্দোলনের চেতনা ধারণ করেই বলতে চাই, আমরা একটা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। আপনার ক্ষমতায় আসেন, বিএনপিকে বের করে দেন ১০০ বছরের জন্য, এটা আমরা চাই কিন্তু ভোট নিয়ে আসেন। 


নাসির বলেন, হ্যা আমরা ভোট করব। তবে আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে চাই না। খালেদ বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের কথা কোত্থেকে এলো। তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দেন। নাসির বলেন, তাহলে বিএনপি তাদের অবস্থান ক্লিয়ার করুক। খালেদ বলেন, আপনারা, সরকারকে বলেন তাদের অবস্থান ক্লিয়ার করতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে। 

A ds


নাসির আলোচক বিএনপির আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে ইঙ্গিত করে বলেন, এখানে একজন আইনজীবী আছেন, আপনিও ভালো পড়াশোনা জানা লোক। ছাত্রলীগকে যখন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তখন কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ায় তারা আসে নাই। আপনি যদি বিচার ছাড়াই কমিশন গঠন ছাড়াই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দেন তাহলে কেমন হবে। খালেদ বলেন, কমিশন গঠন করেন। নাসির বলেন, আমরা তো সেই দাবি করছি। আমরা তো জনগণের কাছে গিয়ে শুধু ভোট চাই ভোট চাই বলছি না। 


তখন খালেদ বলেন, আপনারা জনগণকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তারা কী চায়। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মাদবরি না করে জনগণকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন তারা কী চায়? উত্তেজিত খালেদ বলেন, আমরা দেখতেছি আপনারা বিভিন্ন জায়গায় শালিস করছেন, বিচার করছেন, কে দিয়েছে আপনাদের এই অধিকার?


জবাবে নাসির বলেন, আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি। জিহাদ হত্যার বিচার আমরা এখনও পাই নাই। এই সরকার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে। খালেদ মুহিউদ্দীন থামিয়ে দিয়ে বলেন, আপনাদের দাবি, সরকার বিচার করে তারপর ইলেকশন দেবে? জবাবে নাসির বলেন, না না। আমরা চাই গুম খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার হোক। কারণ অন্যরা ক্ষমতায় এলে বিচার নাও হতে পারে। কারণ ভোটের পর যেসব সরকার এসেছে তারা বিচার করে না। বড় বড় কথা বলা যায়। 


তাদের দুজনের বাদানুবাদ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 


টক শোর ভিডিও শেয়ার করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক রুবায়েত খন্দকার লিখেছেন, খালেদ মহিউদ্দিন কি জানে যে, সে নিজে একজন ওভাররেটেড জার্নালিস্ট? অনুষ্ঠানে গেস্টদের এনে এমন আচরণ করা জার্নালিজমের কোন এথিক্স এর মধ্যে পড়ে? ঝগড়াটেপনা আচরণকে জার্নালিজম বলে চালিয়ে দেয়াকে কি বলে? Look at his face, he is fuming.  


তার নিচে নাঈম হোসেন নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ৬৭ মিনিট পুরোটা দেখলে ভালোই লাগবে। আরেকজন লিখেছেন, খালেদ মহিউদ্দীন এপারের ময়ুখ।

Post a Comment

Previous Post Next Post