সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: ‘নিশ্চিত’ ষড়যন্ত্র দেখছেন সারজিস আলম
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে ‘নিশ্চিত ষড়যন্ত্র আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
এ ঘটনার মাধ্যমে ‘দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা হচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাকক্ষে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘ঠাকুরগাঁও রাইজিং’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “নিজেদের ভেতরের বিতর্ক বা মতপার্থক্যের সুযোগ নিচ্ছে খুনি হাসিনার দোসররা।“
সচিবালয়ের দুই কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আগুন নির্দিষ্ট একটা জায়গা থেকে উৎপত্তি হয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বে, এটাই তো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এমন দুইটি রুমে আগুন জ্বলেছে যে, রুমগুলো এই অভ্যুত্থানের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সহযোদ্ধাদের। যারা এখন বর্তমান সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন।”
অগ্নিকাণ্ডকে ‘নিশ্চিত ষড়যন্ত্র’ দাবি করে তিনি বলেন, “অন্যকোনো চক্রান্ত আছে কিনা, থাকলে এটি কী পরিসরে, কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে, সেটিও আমাদের পর্যবেক্ষণ করে প্রতিহত করতে হবে।”
সারজিস আলম বলেন, “আমাদের জায়গা থেকে আমরা স্পষ্ট করে বলি, সচিবালয়ে যে আমলারা ছিল, এদের একটা বড় অংশ খুনি হাসিনাকে চেয়ারে বসিয়ে রেখেছিল। এদের একটা বড় অংশ সব অন্যায়, অপকর্মকে বিগত ১৬ বছর ধরে বৈধতা দিয়েছে। এদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশের সরকারি অফিসগুলোতে খুনি হাসিনার ‘পারিবারিক যে তন্ত্র’ সেটি চালিয়েছে।”
‘শেখ হাসিনার দালালরা এখনও সচিবালয়ে অফিস করছে’ মন্তব্য করে ছাত্র আন্দোলনের এ নেতা বলেন, “তাহলে সচিবালয় নিরাপদ কিভাবে থাকবে?”
আবারও চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে ও দেখতে পেরেছি, সেখানে একটি কুকুরের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। সচিবালয়ের রুমের ভেতরে কিভাবে একটি কুকুর পাওয়া যেতে পারে। এখানে আরো কোনো চক্রান্ত আছে কি না।”
জাতীয় নাগরিক কমিটি নিয়ে সারজিস বলেন, “এটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। আগামীর চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ নেতৃত্ব তৈরির প্ল্যাটফরম হিসেবে কাজ করবে নাগরিক কমিটি।”
নির্বাচনের বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের এখনো ৫ মাস পার হয়নি, এই সরকারকে স্ট্যান্ডার্ড সংস্কারের সময় ও সুযোগ দিতে হবে।”
ঠাকুরগাঁওয়ে ‘মামলা বাণিজ্য’ হচ্ছে দাবি করে সারজিস আলম বলেন, “মামলায় নাম না দেওয়া জন্য একবার টাকা নেওয়া হয়, নাম দেওয়ার পর কাটানোর জন্য আবার নেওয়া হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের কেউ যদি এই অভ্যুত্থানকে পুঁজি করে মামলা বাণিজ্য করে, জিম্মি করে হয়রানি করে কোর্টে চক্কর কাটায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলব।”
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “বড় বড় ব্যবসায়ীকে রাতের বেলা বাসায় ডেকে নেওয়া হয়, সেখান থেকে টাকার পরিমাণ ঠিক করা হয়, এগুলো যদি চলে তাহলে এগুলোর জন্য তো মানুষ রক্ত দেয়নি, জীবন দেয়নি।”
এ সময় তার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এম ওয়ালি উল্লাহ, লামিউল ইসলাম ও ঠাকুরগাঁওয়ের আবরারুল ইসলাম মঞ্চে ছিলেন।